আমড়া খেলে অনেক উপকার

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের খাওয়াদাওয়ায়ও পরিবর্তন আসে। মৌসুমি শাক-সবজি, ফল আমাদের খাওয়াদাওয়ায় বৈচিত্র্য নিয়ে আসে। আর এগুলো আমাদের শরীরের জন্যও খুবই উপকারী।

দেশি ফল আমড়া খেতে খুবই ভালো। আমড়ার চাটনি, আচার, টক এসব তো হয়ই। এছাড়া অনেকে লবণ-মরিচগুড়া দিয়ে কাঁচা আমড়া খেয়ে থাকেন। রাস্তার ধারে, কলেজ-স্কুলের গেটের বাইরে আমড়া দেখতে পাওয়া যায়। এই আমড়ার রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। চলুন, জেনে নেওয়া যাক-

আমড়ায় রয়েছে প্রচুর আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে একে বলা হয় আম্রতক। এ ছাড়া আমড়াগাছেরও রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। এই গাছের বিভিন্ন অংশ ডায়রিয়ার চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয়। কানের ব্যথা, ক্ষত আর হাইপার এসিডিটির চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয় এই আমড়া।
আমড়ার অনেক উপকারী দিকও রয়েছে।

মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতেও আমড়া খুব উপকারী। এই সময়ে অধিকাংশ বাড়িতেই জ্বর, সর্দি কাশির সমস্যা দেখা যায়। জ্বর হলে খাওয়ার কোনোরকম ইচ্ছে থাকে না। আমড়ার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, আয়রন। যে কারণে আমড়াকে গোল্ডেন আপেলও বলা হয়। তাই জ্বর, ডায়রিয়া থেকে শুরু করে হজমের সমস্যা, সবকিছুতেই কার্যকরী এই ফল। এছাড়া আরও যেসব স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে-

হজমের সমস্যায় : আমড়ার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। যা শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়। মায়োগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দূরে রাখে। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায়।

হিমোগ্লোবিন তৈরিতে : আমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। যা শরীরে অক্সিজেন পরিবহণ ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে অ্যানিমিয়ার সমস্যাকেও দূরে রাখে।

ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস :  আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এ কারণে এটি শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেমন হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণসহ নানা রোগের নিরাময়ে অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে। এছাড়া আমড়াতে থাকা ভিটামিন সি মানবদেহের প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা, দৃঢ়তা বজায় রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধেও ভালো কাজ করে।

হাড়কে মজবুত রাখে : আমড়ার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। তাই নিয়মিত খেতে পারলে শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়। হাড়ের যেকোনো রোগ যেমন দূরে রাখে তেমনই হাড়কে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখে : আমড়াতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যেমন ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল থাকে। এই উপাদানগুলোই স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

মূত্রের পরিমাণ বাড়ায় : আমড়ার রসের একাধিক ওষধিগুণ রয়েছে। শরীর থেকে প্রস্রাবের মতো রেচক বের করে দিতে ভূমিকা রয়েছে এই ফল। ফলে শরীর থেকে সোডিয়ামের পরিমাণ কমিয়ে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সর্দি-কাশির সমস্যাতেও ভালো কাজ করে আমড়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *