দেশে করোনা নিম্নমুখী ও ডেঙ্গু সহনীয়: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

জনতার কণ্ঠ নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী ও ডেঙ্গু সহনীয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ বুধবার দুপুরে করোনার পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চ্যুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব কথা জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে গত এক সপ্তাহে ৬৮২ জন মারা গেছেন করোনায়। এ সময়ে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৯১টি করোনার পরীক্ষা হয়েছে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৭ শতাংশ কম। গত ৭ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২২ হাজার ৬৮৮, যা এর আগের ৭ দিনের তুলনায় ১৬ হাজার ৬৮০ কম। গত ৭ দিনে দেশে করোনায় যে মৃত্যু হয়েছে, তা আগের ৭ দিনের চেয়ে ৪১ শতাংশ কমেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) নাজমুল ইসলাম এই বুলেটিন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ ধরে করোনায় মৃত্যুতে একটি নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গতকাল রোগী শনাক্ত ১২ শতাংশের নিচে ছিল। সামগ্রিকভাবে গত এক মাসে সংক্রমণের যে গতি, তাতে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ ও আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে শেষের দিকে এসে একটি নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে করোনার রোগীর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৭৭, যা জুলাইয়ে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৬–এ দাঁড়ায়। এ ছাড়া আগস্ট মাসে ২ লাখ ৫১ হাজার ১৩৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। অধিদপ্তরের দাবি, কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শনাক্তের হার কমে এসেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, সবচেয়ে বেশি করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছেন ঢাকায়, পাঁচ লাখের বেশি। চট্টগ্রামে ৯৬ হাজারের বেশি। নোয়াখালী জেলায় সবচেয়ে কম ২১ হাজার ৯৩৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

করোনার টিকা বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, করোনার টিকা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৭১ লাখের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন এবং পাসপোর্টের মাধ্যমে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৯ জন।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চ্যুয়াল বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। আর ঢাকার বাইরে রোগীর সংখ্যা ৪৬। সব মিলিয়ে সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ২০২।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি ২০১৯ সালের তুলনায় একটি সহনীয় অবস্থায় আছে। কিন্তু এটিকে আমরা আরও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারি, যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজগুলো যথাসময়ে শেষ করি।’ এডিসের বংশ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

নাজমুল ইসলাম জানান, আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী, ৭ হাজার ৬৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। জুলাই মাসে তা ছিল ২ হাজার ২৮৬ জন। ডেঙ্গু কমাতে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে রোগী আরও কমবে। নিজ বাসগৃহ, ফুলের টব, জমা পানি তিন দিনের মধ্যে ফেলে দিতে হবে। জমে থাকা পানি রাখা যাবে না, মশারি ব্যবহার করতে হবে।

জ্বর থাকলে করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষাও করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। উপসর্গ দেখামাত্রই চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই বিরূপ পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চললে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে স্বাভাবিক জীবনের কাছাকাছি যাওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *