জনতার কণ্ঠ ডেস্ক : ভারতে সোনার দাম কমতে শুরু করেছে। অথচ কয়েক মাস আগে পর্যন্ত সোনার দাম বাড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে। ১০ গ্রাম সোনার দাম ৫০ হাজার রুপি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে তাতে ব্যবসায়ী বা কারিগর, লাভ হয়নি কোনো পক্ষেরই। কারণ, গয়না বা ধাতব সোনা নয়, বিনিয়োগ পণ্য হিসেবে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বেড়েছিল সোনার। তার ফলে চাপ বেড়েছিল ক্রেতারও।
সোমবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম (২৪ ক্যারাট) পাকা সোনার দর ছিল ৪৮ হাজার ২৫০ রুপি (জিএসটি বাদে)।
মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ পেরোনোর পর ভারতে এখন অন্য চিত্র দেখা যাচ্ছে। সোনার দাম সর্বকালীন উচ্চতার সাপেক্ষে এখন প্রায় ১২ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে। ফলে, সাধারণ ক্রেতার কাছে সোনা ও গয়নার চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি উৎসবের মৌসুমের আগে মজুত বৃদ্ধির দিকে জোর দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে, চাহিদার পাশাপাশি বেড়েছে সোনার আমদানিও। ব্যবসায়ীদের আশা, আগামী কয়েক মাসে ক্রেতাদের কেনাকাটা আরও বাড়বে।
সরকারি সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে ভারতে সোনার আমদানি হয়েছে প্রায় ১২১ টন, ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্যমান প্রায় ৪৬ হাজার কোটি রুপি, যা আবার গত পাঁচ মাসের সর্বোচ্চ। আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ৬৩ টন। সোনা ব্যবসায়ী মহল মনে করছে, সেপ্টেম্বরেও আমদানি ৮০ টনের কাছাকাছি থাকতে পারে।
সোনা ব্যবসায়ীদের ব্যাখ্যা, মহামারির জন্য ব্যবসা ভালো রকম ধাক্কা খেয়েছিল। গত বছর বিয়েসহ পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্থগিত রেখেছিলেন অনেকেই। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যের কারণে সাধারণ ক্রেতারাও মুখ ফিরিয়ে রেখেছিলেন। ফলে, পুরোনো চাহিদা জমছিল অনেক দিন ধরে। এবারের উৎসবের মৌসুমের আগে সেই পুঞ্জীভূত চাহিদার কিছুটা অংশ হলেও মিটিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই কম দামের সুবিধা নিয়ে গত মাসে সোনার মজুত বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সোনা ব্যবহার করেন ভারতীয়রা। ১৯৪৭ সালে দেশটিতে ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৮৮ রুপি। ১৯৫৯ সালে প্রথম সোনার দাম পৌঁছায় ১০০ রুপির ঘরে। তার ঠিক ১৫ বছর পর, অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে এক ধাক্কায় ১০ গ্রাম সোনার দাম বেড়ে হয় ৫০০ রুপি। তা ১০ হাজার রুপিতে ওঠে ২০০৭ সালে। এরপর ২০২০ সালে তা ৫৬ হাজার রুপিতে উঠে যায়।