জনতার কণ্ঠ ডেস্কঃ যে ১০টি জুস দ্রুত আপনার ওজন কমাবে ৮০% পর্যন্ত ডেটা সংরক্ষণ করে অ্যাপে ছবিগুলি দেখুন। ওজন নিয়ন্ত্রণ শুধু নিজেকে সুন্দর ও স্লিমই রাখে না, এর ফলে আপনি অনেক রোগ বালাই থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু ওজন কমাতে গিয়ে আমাদের কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন ওজন একবার বেড়ে গেছে মানে এখানেই সব শেষ। তা কিন্তু একেবারেই নয়। বাড়তি ওজন কমানোর জন্য রয়েছে বেশ কিছু উপায়। কিছু খাবার আছে যা খেলে আপনার ওজন কমবে। এখানে আমি আপনাদের বলব কিভাবে জুস পান করে আপনি ওজন কমামতে পারেন।
১। জাম্বুরার জুস: আমেরিকাসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশে ওজন কমানোর জন্য বিখ্যাত ফল হচ্ছে গ্রেপফ্রুট (grapefruit)। জাম্বুরাকে গ্রেপফ্রুট-এর পূর্ব পুরুষ বলে ধরা হয়। প্রতি বেলা খাবার আগে জাম্বুরার জুস পান করলে সবচেয়ে বেশী উপকার পাবেন। এই জুস ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্যও ভাল রাখবে। খাবার আগে জাম্বুরা জুস পান করলে আপনাকে অতিরক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখবে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি বেলা খাবারের ২০ মিনিট আগে জাম্বুরা জুস পান করলে ভাল ফল পাবেন।
২। টমেটো জুস: টমেটো জুসে আছে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন সি। এক গ্লাস টমেটো জুস আপনাকে সারাদিন ধরে সজীব রাখবে । এটি আপনার দেহকে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করে দেহের আর্দ্রতা ধরে রাখবে। ফলে ওজন কমবে। টমেটো জুস ক্ষুধা নিবারণ করে। এই জুস আপনার মুখের স্বাদগ্রন্থিগুলোকে আচ্ছন্ন করে আপনাকে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রাখে।
৩। লেবুর জুস: লেবুর জুসে আছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ভিটামিন সি। আপনার ওজনের সাথে এর রয়েছে বিপরীতমুখী সম্পর্ক। গবেষণায় দেখা গেছে যারা ভিটামিন সি বেশী গ্রহণ করেন তাদের ওজন বৃদ্ধি কম হয়। যারা বেশী বেশী ভিটামিন সি গ্রহণ করেন, ব্যায়ামের সময় তাদের শরীর থেকে বেশী পরিমাণে চর্বি ঝরে। এছাড়া লেবুতে থাকা হেসপারেটিন (hesperetin) নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৪। দ্রুত ওজন কমাবে করলার জুস: প্রতিদিন করলার জুস পান করলে এটা লিভার থেকে বাইল এসিড নির্গত করতে সাহায্য করে, যা শরীরের চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। এছাড়া করলায় আছে খুবই করম ক্যালরি (১০০ গ্রাম করলায় আছে ১৭ ক্যালরি)। দ্রুত ওজন হ্রাসের জন্য করলার জুস খুবই কার্যকরি। এছাড়া করলার জুস আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৫। পালং শাকের জুস: পালং শাক বা স্পিনাচ খুবই স্বাস্থ্যকর একটি সবজি। নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এই শাকে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-২, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফোলিক এসিড, পটাশিয়াম, কপার, ফাইবার (আঁশ), প্রোটিন (আমিষ), ফসফরাস, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ওমেগা-৩, এবং ট্রিপটোফ্যান। পালং শাক আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, ফলে প্রতিদিন খাবার আগে শুধু এক কাপ পালং শাকের জুস আপনাকে স্লিম থাকতে সহায়তা করবে। পালং শাকে থাকা আঁশ ওজন কমানোয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৬। গাজরের জুস: গাজরের জুস আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে কারণ এতে আছে খুবই কম ক্যালরি এবং প্রচুর পরিপোষক (nutrients) যা আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সহজ করবে। গাজর একটি সুপারফুড। এতে প্রচুর আঁশ আছে ফলে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গাজরের জুস পান করলে তা আপনাকে দুপুর পর্যন্ত পেট ভরা থাকার অনুভূতি দেবে। গাজর জুস পিত্তের রস নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। যা দ্রুত চর্বি পোড়াতেও সহায়তা করে এবং ওজন কমায়।
৭। আমলকির জুস: সকালে শুধু এক গ্লাস আমলকি জুস পানই আপনার ওজন অনেকাংশে কমাতে পারে। এটা সারাদিন আপনার হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী রাখবে এবং আপনার বিপাকীয় ব্যবস্থার গতি বাড়াবে। এই জুস দ্রুত আপনার চর্বি ঝরাবে, ফলে ওজন হ্রাস পাবে। আমলকি জুস সাধারণত খালি পেটে খেলে বেশি উপকার হয়। এর সঙ্গে কয়েকফোটা মধু যোগ করলে শুধু স্বাদই বাড়বে না বরং সারাদিন ধরে আপনি বলবান ও সক্রিয় থাকবেন।
৮। দ্রুত ওজন কমাবে শসার জুস: ওজন কমাতে শসা খুবই কার্যকরি ভূমিকা রাখে। এতে আছে অনেক কম ক্যালরি এবং প্রচুর পানি এবং আঁশ যা আপনাকে সব সময় পেট ভরা থাকার অনুভূতি দিবে। এছাড়া শসায় আছে স্বাস্থ্যকর ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ। পান করার আগে শসার জুসে একটু লেবুর জুস এবং পুদিনা পাতা যোগ করলে এটা আরও মজাদার হবে।
৯। বিট জুস: বিট জুস আপনার ওজন কমানোর খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগ। বিট জুসে আছে প্রচুর স্বাস্থ্যকর ভিটামিন এবং মিনারেল। এতে থাকা আঁশ আপনাকে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকার অনুভূতি দিবে। বিট জুসে অনেক কম ক্যালরি থাকায় এটা দ্রুত আপনার ওজন হ্রাসে সহায়তা করবে। এছাড়া বিট জুস কোষ্ঠকাঠিন্য এবং রক্ত শূন্যতা দূর করে।
১০। আলো ভেরা জুস: আলো ভেরা জুস আপনার মেটাবলিযমের দ্রুত উন্নতি সাধন করবে। আলো ভেরায় থাকা ভিটামিন বি শরীরের চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে ওজন হ্রাসে সাহায্য করে। আলো ভেরা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া প্রতিদিন আলো ভেরা জুস পান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে, চুল সুন্দর রাখবে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখবে।