মাথার ত্বকে খুশকি তাড়ানোর প্রাকৃতিক দাওয়াই

জনতার কণ্ঠ ডেস্ক: মাথার ত্বকে একধরনের ছত্রাক বা ইস্ট জীবাণুর সংক্রমণ বেড়ে গেলে খুশকি দেখা দেয়। এটা খুশকির অন্যতম প্রধান কারণ হলেও আরও নানা কারণে খুশকির উপদ্রব হতে পারে।

খুশকি আমাদের অতিপরিচিত সমস্যা, যার ভুক্তভোগী চারপাশের অনেকেই। বিশেষ করে শুষ্ক ঋতুতে। অনেকের ক্ষেত্র খুশকির সমস্য ঋতু ভিত্তিক আবার অনেকের ক্ষেত্রে বছর ব্যাপি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শীতকালে খুশকির প্রকোপ তুলনামূলক বেশি থাকে। মাথার ত্বকে একধরনের ছত্রাক বা ইস্ট জীবাণুর সংক্রমণ বেড়ে গেলে খুশকি দেখা দেয়। এটা খুশকির অন্যতম প্রধান কারণ হলেও আরও নানা কারণে খুশকির উপদ্রব হতে পারে। তৈলগ্রন্থি (সেবাসিয়াস গ্রন্থি) থেকে ত্বকের তৈলাক্ত উপাদান নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে গেলেও খুশকি দেখা দেয়। আবার অনেকে বংশগত কারণে খুশকির সমস্যায় ভোগেন।

খুশকি হলে মাথা চুলকানো, চুল পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে বিরক্তিকর অবস্থায় পড়তে হয় মাথা থেকে সাদা সাদা খুশকি আমাদের গায়ে ঝরে পড়লে। ব্যাপারটা খুবই অস্বস্তিকর। খুশকি হলে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। এখন যেহেতু শীতকাল, খুশকির প্রকোপ খুবই পরিচিত একটি বিষয়। প্রাথমিকভাবে কিছু প্রাকৃতিক দাওয়াই দিয়ে কীভাবে খুশকি তাড়াতে পারেন, তা নিয়েই এ আয়োজন।

হলুদ: হলুদ আমাদের উপমহাদেশীয় রান্নায় বহুল ব্যবহৃত একটি উপাদান। হলুদে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান। রান্না ছাড়াও ত্বক ও চুলের চর্চায় হলুদ দারুণ কার্যকর। খুশকি দূর করতে তাই হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় কাঁচা হলুদ বেটে ব্যবহার করলে। তবে কাঁচা হলুদ না পেলে হলুদের গুঁড়াও ব্যবহার করা যেতে পারে।
হলুদ বাটা বা হলুদের গুঁড়া পানির সঙ্গে নারকেল বা জলপাই—যেকোনো তেল মিশিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করে নিন। এভাবে রেখে দিন কিছুক্ষণ। অন্ততপক্ষে দুই ঘণ্টা। এবার শ্যাম্পু করে ফেলুন। খুশকি কমার পাশাপাশি মাথায় ম্যাসাজ করার ফলে বাড়বে রক্ত সঞ্চালন। এতে করে চুল পড়াও কমে যাবে।

বেকিং সোডা: অল্প একটু বেকিং সোডা নিয়ে ভেজা মাথায় মাখিয়ে নিন। খুব বেশি বেকিং সোডা ব্যবহার করা যাবে না কিন্তু! তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ভেজা মাথায় ভালোভাবে মাখিয়ে আঙুল দিয়ে মাথার ত্বকে ঘষে নিন। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন, মাথার কোথাও যেন বেকিং সোডা লেগে না থাকে। এটি আপনার মাথার ত্বকে থাকা ফাঙ্গাস বা ছত্রাক দূর করতে সাহায্য করবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম দিকে চুল কিছুটা শুষ্ক লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে নারকেল তেল গরম করে মাথায় ম্যাসাজ করতে পারেন।

জলপাই তেল ও নারকেল তেল: খুশকি তাড়াতে জলপাই তেল বা অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। এই দুটি তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করতে পারেন। চাইলে নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন কিছুটা মেথিও। নারকেল বা জলপাই তেল মাথায় ম্যাসাজ করলে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকবে এবং আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। মুক্তি মিলবে খুশকির হাত থেকে। তবে যে তেলই ব্যবহার করুন না কেন, খেয়াল রাখতে হবে, যেন ভালো শ্যাম্পু দিয়ে তা ধুয়ে ফেলা হয়।

অ্যালো ভেরা বা ঘৃতকুমারী: মাথায় খুশকি হলে ঘৃতকুমারীর রস মাখালে উপকার পাবেন। অ্যালো ভেরা রস ভালোভাবে মাথায় মাখিয়ে নিন। চাইলে এর সঙ্গে নিমপাতার রস মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। এতে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি চুল পড়ার সমস্যাও কমে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *